Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

কৃষিবিদ সুবোধ চন্দ

যে জাতি হাজার বছর ধরে পরাধীনতার গøানি লালন-পালন ও বহন করে আসছিল। সেই জাতিকে সুসংগঠিত করে একখÐ স্বাধীন ভ‚মি উপহার দেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গর্বের আত্মপরিচয় হিসেবে জাতি লাভ করে, লালসবুজ পতাকা- জাতীয় সঙ্গীত-রণ সঙ্গীত। সেই মহানায়ক পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে পা রাখেন। স্বাভাবিকভাবেই দেশ শাসনের ভার জাতি তাঁর ওপর অর্পণ করে। সদ্য স্বাধীন রক্তঝরা, মুক্তিযুদ্ধে বিধ্বস্ত একটি দেশ। হাজারো সমস্যা, আর্থিক  দৈন্যতা, নেই মূলধন, নেই বৈদেশিক মুদ্রা। অপরদিকে পরাজিত শক্তির উৎকট ঝামেলা, দেশ-বিদেশের গভীর ষড়যন্ত্র। সকল প্রতিহিংসা, প্রতিক‚লতাকে উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২-৭৩ আর্থিক বছর প্রথম বাংলাদেশের বাজেট পেশ করেন। বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতের মধ্যে ১০১ কোটি টাকা রাখেন কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে। সেই বাজেট কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের মাইলফলক।
 অতঃপর কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন। হাওড়-বাঁওড়-চর-পাহাড়-গড় ও সমতল ভ‚মির কৃষকের উপযোগিতার ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়নে নাড়া দেন। তিনি জাতিকে স্মরণ করিয়ে দেন, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নয়, এখন লাঙল জোয়াল কোদাল কাঁস্তে নিয়ে মাঠে নামার সময়। এ জন্য তাঁর সরকার কৃষি উন্নত দেশ থেকে বাংলার মাটি, জলবায়ু ও কৃষকের উপযোগী বিজ্ঞানসম্মত উন্নত প্রযুক্তি সংগ্রহে নেমে পড়েন। ব্যক্তি মুজিবের ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়ে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যায়। সেদিনকার পূর্ব জার্মানি থেকে ৩৮ হাজার সেচযন্ত্র, সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেন থেকে বর্টারে ট্রাক্টর এবং ফিলিপাইন থেকে আইআর-৮ উচ্চফলনশীল জাতের ধান আমদানি করেন। উক্ত আমদানিকৃত বীজ ও কীটনাশক উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে। বাংলাদেশ    কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষি উপকরণ যথা সার, সেচযন্ত্র, ডিজেল ও উন্নত জাতের বীজ সরকারি ভর্তুকি মূল্যে সহজলভ্যে কৃষকদের হাতে তুলে দেয়। এমনকি বঙ্গবন্ধু ভারতের ফারাক্কা থেকে শুকনো মৌসুমে পদ্মা নদীতে ৫৪ হাজার কিউসেক পানির নিশ্চয়তা আদায় করেন। এ ছাড়া ১৯৭৩ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প পূর্ণোদ্যমে চালুর যথাযথ ব্যবস্থা নেন।
 ঘোষিত সবুজ বিপ্লব পূর্ণবাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু  কৃষকদের হাতে উপকরণ ক্রয়ে নগদ অর্থ জোগানের ওপর জোর দেন। এ লক্ষ্যে দৃঢ় মনোবলের আলোকে কিছু যুগান্তকারী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন। যার সূচনালগ্নে পাকিস্তান আমলের বিভিন্ন ব্যাংকের বকেয়া দশ লাখ কৃষকের সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করে নেন। কৃষকদের খাজনার হয়রানি ও ব্যতিব্যস্ত জীবন থেকে রেহাই দিতে পঁচিশ বিঘা পর্যন্ত ভ‚মি খাজনা মওকুফ করে দেন। ভ‚মি মালিকানা প্রকৃত কৃষকের হাতে তুলে দেয়ার সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারায় ভ‚মি মালিকানা সর্বোচ্চ সিলিং একশত বিঘা পর্যন্ত ধার্য করেন। বাড়তি বা খাসজমি ভ‚মিহীন কৃষকদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অতঃপর কৃষিঋণ পাওয়াতে হয়রানি রোধে ১৯৭৩ সালে কৃষকদের  দোড়গড়ার ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া জাতীয়করণকৃত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রায় ৩০ কোটি টাকা সহজলভ্য কৃষিঋণ বিতরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু দেশের সীমিত জমি সর্বোচ্চ ব্যহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বসতবাড়ির আনাচে-কানাচে, সড়ক-জনপথ, স্কুল কলেজ, মসজিদ, মন্দির, মাদরাসার পতিত জমিতে বৃক্ষ রোপণের আহŸান জানান। চাষযোগ্য জমি যাতে এক ইঞ্চিও অব্যবহৃত না থাকে সে ব্যাপারে সব মহলকে সজাগ করে তুলেন। তাঁর আহŸানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে সেনানিবাসের পতিত জায়গা চাষাবাদের অধীনে আনেন। অর্থাৎ সমগ্র জাতি যার যার অবস্থান থেকে উৎপাদনমুখী হওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। একাধারে মুক্তিযুদ্ধে হাতে গড়া দেশ অন্যধারে দেশ গড়ার অদম্য স্পৃহা জাতিকে সৃজনশীলতায় নিয়ে যায়। তরুণ ও যুবসমাজ দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামমুখী হতে থাকে। দেশীয় লাঙল ছেড়ে পাওয়ারটিলারে জমিচাষে কৃষকগণ ঝুঁকে পড়ে। দলগত এবং সমবায়ের ভিত্তিতে সেচকার্যে গভীর-অগভীর ও পাওয়ার পাম্প ব্যবহার শুরু হয়। মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষা হাতে হাত ধরা আবার মাঠে ময়দানে দেখা দেয়।
বঙ্গবন্ধু উৎপাদনমুখী জাতীয় জোয়ারকে ধরে রাখতে কৃষিকে লাভজনক খাত হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেন। এ লক্ষ্যে অর্থকরি ফসল হিসেবে পাট, ইক্ষু, চা ও তুলা চাষ ব্যাপক সম্প্রসারণের কর্মসূচি গ্রহণ করেন। পাটচাষিদের পাট চাষের প্রতি আরো উৎসাহ ও উদ্দীপনা বজায় রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন বাস্তবসম্মত প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে কৃষকগণ যাতে পাটের ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য ১৯৭২ সালে পাটের মণপ্রতি সর্বনি¤œ মূল্য ১০০ টাকা ধার্য করেন। এই প্রথম কৃষকসমাজ রাষ্ট্রের কাছ থেকে উৎপাদিত ফসলের গ্যারান্টি অর্জন করে। উন্নতমানের পাট উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয়ে আলাদা অধিদপ্তর হিসেবে ‘পাট সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ১৯৭৫’ চালু করেন। উক্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে শক্তিশালী পাটচাষি সমিতি গড়ে তুলেন। যাতে পাটচাষিরা নিজেদের স্বার্থ নিজেরাই যাচাই-বাছাই করে নিতে পারে। সমিতির মাধ্যমে ঋণ দেয়া উপকরণ বিতরণ এবং বাজারজাতকরণে অধিকতর অধিকার প্রদান করেন। এ ছাড়া পাট গবেষণা কেন্দ্রকে গতিশীল, টেকসই ও চাহিদামাফিক যুগোপযোগী করতে জুট অ্যাক্ট, ১৯৭৪ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামকরণ করেন। এ ছাড়া কৃষক ও জাতীয় উৎপাদনের স্বার্থে পাট মিলগুলোকে জাতীয়করণ করেন। বাংলার অপর আরেকটি অর্থনৈতিক ফসল ইক্ষু চাষকে আধুনিকীকরণের মাধ্যমে অধিক এলাকা চাষের আওতায় আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে চিনি শিল্পের উন্নয়নে ‘নিবিড় ইক্ষু উন্নয়ন প্রকল্প’ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রকল্প ও ‘খামার আধুনিকীকরণ প্রকল্প’ হাতে নেন। বিদ্যমান কয়েকটি চিনিকলের যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণের ব্যবস্থা নেন। ইক্ষুচাষিদের আগ্রহী গড়ে তোলার প্রয়াসে উন্নত জাত ও অধিক ফলনের ওপর জোর দেন এবং কৃষক ও জাতির উদ্দেশ্যে চিনিকলগুলোকে জাতীয়করণ করেন। এ ছাড়া পাহাড়ি উপনিবেশিক অর্থকরী প্রতিযোগিতামূলক ফসল চা আধুনিকীকরণে বিভিন্নমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট ফসলের সাথে প্রায় ৩ লাখ শ্রমিক সরাসরি জড়িত যাদের মধ্যে ৭৫ ভাগই নারী ও উপজাতি। এই বৃহৎ অঙ্কের শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে টিকে থাকায় উন্নত জাত ও মানসম্পন্ন চা উৎপাদনের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ গবেষণা নির্ভর ‘বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ ১৯৭৩, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, সিলেট স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু বাংলার আদি ঐতিহ্যবাহী গর্বের হারিয়ে যাওয়া অর্থকরী ফসল তুলা চাষ পুনরায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ১৯৭২ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘তুলা উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন করেন। বোর্ডকে এ দেশের উপযোগী জাত বাছাই, গবেষণা ও চাষযোগ্য এলাকা চিহ্নিতকরণসহ ব্যাপক চাষের কর্মসূচি প্রদান করেন।
বঙ্গবন্ধু সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলার আদি-অন্তকালের শ্যামলিমার নৈশ^র্গিক সৌন্দর্য ধরে রাখার প্রয়াসে বৃক্ষ রোপণকে  বৈচিত্র্যমুখী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে ফুলফল শাকসবজি ও শৌখিন গাছগাছড়ার চারা উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড স্থাপন করেন। এ ছাড়া চারা উৎপাদনকারী সমমনা বিভাগ ও সংস্থা যথা বনায়ন, বিএডিসি, এনজিও এবং ব্যক্তিপর্যায় চারা উৎপাদনকারীদের মধ্যে অবাধ সৃষ্টিশীল প্রতিযোগিতা মনোভাব গড়ে তোলার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর ফলে কৃষকদের চারা প্রাপ্তি সহজ হয় এবং গ্রাম-গ্রামান্তরে বৃক্ষরোপণের মানসিকতা গড়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধু কৃষিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি স্থায়ী ও টেকসই করায় সমন্বিত গবেষণার ওপর জোর দেন। এ জন্য কৃষির সাথে জড়িত সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার গবেষণাগার এক ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ নেন। সে লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল’, খামারবাড়ি রোড, ঢাকা প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া গবেষণাগারের উদ্ভাবিত জাত ও বীজের মান কৃষকপর্যায়ে যথাযথ বজায় রাখার ওপর জোর দেন। যাতে বীজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে কৃষককুল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ ব্যাপারে সরকারি- বেসরকারি উৎপাদিত খামারের বীজ বাজারজাতকরণের মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি স্বায়ত্তশাসিত এজেন্সি হিসেবে ‘বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি’ ২২ জানুয়ারি, ১৯৭৪,  গাজীপুর স্থাপন করেন। এ ছাড়া গবেষণাগারের উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও জাত ত্বরিত গতিতে সঠিক তথ্যসহ করণীয় কৃষকদের হাতে পোঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগকে চৌকস দক্ষ কারিগরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সম্প্রসারণ রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (সার্ডি) ১৯৭৫, বাংলাদেশ জাপান সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরে গাজীপুর, ঢাকা স্থাপন করেন। যা উন্নত বিশে^র সমকক্ষ              আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যুগোপযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধু কৃষি সংশ্লিষ্ট মৎস্য ও পশুসম্পদ বিভাগকে গতিশীল ও যুগোপযোগী করার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তিনি বিশ^াস করতেন মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদের দেশÑ বাংলাদেশ। তিনি মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে মহাজনী শোষণ থেকে রক্ষার জন্য ‘জাল যার জলা তার’ নীতি ঘোষণা দেন। স্বায়ত্তশাসিত সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বাংলাদেশ মাৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)’, মতিঝিল, ঢাকা ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত কর্পোরেশনের মাধ্যমে সরকারি জলাশয়ে মাছ আহরণ, বিক্রয়, বাজারজাত, সমুদ্রগামী মাছধরার নৌকা-জাহাজ তৈরি- আমদানি, মাছের পোতাশ্রয়-বন্দর, কোল্ডস্টোরেজ, নিলাম বিক্রয় ও সংরক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করেন ও তদারকির দায়িত্ব দেন। উক্ত সংস্থার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ‘বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ একাডেমি (বিএমফএ)’, ১৯৭৩ স্থাপন করেন। একাডেমি স্থাপনে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সে দিনের ইউএসএসআরের (সোভিয়েত ইউনিয়ন) তত্ত¡াবধানে তাদের মেরিন বিশেষজ্ঞ এবং কলাকৌশলীদের দিয়ে সম্পন্ন করেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে উৎপাদিত দুধ ক্রয়ে সমবায়ী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা, ঢাকা, ১৯৭৪ চালু করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার গাভী বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। গ্রামীণ উন্নয়নের সাথে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গকে কৃষি, উদ্যান, টিসু কালচার, মৎস্য, পশুসম্পদের ওপরে হাতেকলমে প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৪ সালে গবেষণাধর্মী ‘পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)’, বগুড়া।
বঙ্গবন্ধু বাংলা ও বাঙালির নাড়ির স্পন্দন খুব সহজে বুঝতে পারতেন। তাঁর পক্ষেই উন্নয়নে সিদ্ধান্ত নিতে একবারের স্থলে দুইবার ভাবতে হতো না। স্বাধীনতার পর ভারত ফেরত এক কোটি শরণার্থী সম্মানের সাথে পুনর্বাসন করাটা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি গ্রামীণ জীবনকে এনে দাঁড় করায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দেশের আপামর জনগণ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি ও ৪টি আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা যথাÑ কেয়ার, কারিতাস, এমসিসি, আরডিআরএস এবং একটি দেশীয় এনজিও ব্র্যাককে সাথে নিয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে পুনর্বাসনের কাজ সুসম্পন্ন করে। পুনর্বাসনের পরপরই সমান্তরালভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাবার পানি, শিশুদের পুষ্টিযুক্ত খাবার, যোগাযোগ, বাসস্থান, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঋণ প্রদান, কর্মসংস্থান জাতীয় আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিওদের সংগঠনভিত্তিক গ্রামীণ চাহিদা মোতাবেক কার্যক্রম গ্রহণে সম্পৃক্ত করেন।
বঙ্গবন্ধু কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদে ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকাÐে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ ২৯/১৯৭৩ এর মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু পুরস্কার তহবিল’ গঠনপূর্বক পুরস্কার প্রদানের রেওয়াজ প্রচলন করেন। বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে উপলব্ধি করতেন কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়নে মেধাভিত্তিক তারুণ্যের সমাবেশ জরুরি। সে লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে হিমালয় পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেন, কৃষি গ্রাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণীতে উন্নত করা হলো। সাথে সাথে কৃষিবিদদের উপদেশ দেন, কোট-প্যান্ট ছেড়ে গ্রামে গ্রামে কৃষকদের পাশে থেকে উৎপাদন পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেয়ার।
বঙ্গবন্ধুর সেই সাড়ে তিন বছরের সংক্ষিপ্ত সময়কালের চিন্তাভাবনা, কর্মপরিকল্পনা, কর্মসূচি, বিবর্তন ও পরিবর্তন আজকের বাংলাদেশ। যারা এতদিন বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগময় মানুষে মানুষে ঠাসা গরিব এবং দারিদ্র্যতম দেশ হিসেবে বিবেচনা করত। তারাই আজ অবলীলায় বলে, বাংলাদেশ বিশে^র উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। সে দিনের বঙ্গবন্ধুর দিক নির্দেশিত সবুজ বিপ্লবের পথ ধরেই আজ এতটুকু আসা। যা আর বলার অপেক্ষায় থাকে না, দেশ-বিদেশের রেকর্ড দৃষ্টে তা স্পষ্ট-উজ্জ্বল ও ভাসমান। লোকসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার-গুণ। খাদ্য ঘাটতির দেশ আজ খাদ্যে উদ্বৃত্ত এবং একটি রফতানিকারক দেশ। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে এমন কোনো খাত নেই যেখানে বঙ্গবন্ধুর হাতের ছোঁয়া পড়ে নাই। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের রোপিত চারা আজ   মহীরুহ হয়ে ছায়া-বায়ু-পুষ্টি দিয়ে বাঙালি জাতিকে হৃষ্টপুষ্ট করে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত করেছে। য়

উপপরিচালক (অব:), ডিএই, খামারবাড়ি, ফ্ল্যাট এ/৪ প্রেজো, ৬৮৯/বি, বড় মগবাজার, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৫২৪৭৮৫৭  ইমেল-  subodh301@gmail.com&

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon